নেটওয়ার্কের উৎপত্তি
নেটওয়ার্কিং জগতে প্রযুক্তি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলা সত্যিই দুরূহ হয়ে পড়ে। তবে এসব পরিবর্তন সম্পর্কে প্রতিটি নেটওয়ার্ক পেশাজীবির সজাগ থাকা দরকার।
প্রথম দিকের নেটওয়ার্ক ছিল মেইনফ্রেম ভিত্তিক। কম্পিউটিঙের প্রথম দিকে মেইনফ্রেম কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকত বিভিন্ন টার্মিনাল। এই মেইনফ্রেমের সাথে যুক্ত হওয়ার লাইন অনেক সময় বেশ দীর্ঘ হতো, অনেক দূর থেকে সেসব মেইনফ্রেমে যুক্ত হওয়া যেত। দুটি নেটওয়ার্ক থেকে আজকের এই আধুনিক নেটওয়ার্কের জন্ম। প্রথমদিকের একটি নেটওয়ার্ক হলো সেমি অটোমেটিক গ্রাউন্ড এনভায়রনমেন্ট (SAGE) যা যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় বিভিন্ন রাডার স্টেশনের সরকারি কম্পিউটারসমূহকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি করা হয়েছিল ১৯৫৮ সালে। এরপর ১৯৬০ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র গবেষকরা আইবিএম মেইনফ্রেম কম্পিউটারে কম্প্যাটিবল টাইম-শেয়ারিং সিস্টেম (CTSS) পদ্ধতি উদ্ভাবন করলেন। এই টাইম শেয়ারিং পদ্ধতির ফলে একই মেইনফ্রেম কম্পিউটারে একাধিক ব্যবহারকারী একাধিক কাজ একই সময়ে করতে সক্ষম হলো। এরপর এর সাথে যুক্ত হলো মডেম যাতে ব্যবহারকারীরা ডায়াল করে এতে যুক্ত হতে পারে।
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রথম ডায়াল-আপ সার্ভিস ব্যবহার করা হয়েছিল আমেরিকান এয়ারলাইন্সের নেটওয়ার্কে ১৯৬৪ সালে। আইবিএম এর রিজার্ভেশন সিস্টেম ৬৫ টি শহরের ২০০০ কম্পিউটারকে যুক্ত করেছিল কেবল দুটি আইবিএম মেইনফ্রেম ও টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে। এখানে প্রতিটি শহরের টার্মিনালের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা রিজার্ভেশন সম্পর্কিত অনুসন্ধান চালাতে পারত। বিভিন্ন কোয়েরি প্রসেস করা হতো কেন্দ্রের মেইনফ্রেম কম্পিউটারে। যেকোনো ফ্লাইট সম্পর্কিত তথ্য তিন সেকেন্ডের মধ্যে পাওয়া যেত এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।
ষাট ও সত্বর দশকের নেটওয়ার্কসমূহ মেইনফ্রেম ভিত্তিক হওয়ায় এতে সকল প্রসেসিং চলত মেইনফ্রেমে। এর সাথে বিভিন্ন স্থান থেকে টার্মিনাল যোগ করা হতো। এরপর এলো ইথারনেট। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র রবার্ট মেটাকাফ তার পিএইচডি থিসিসের মধ্যে প্রথম ইথারনেটের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। তারপর গড়ে ওঠে পরীক্ষামূলক ইথারনেট নেটওয়ার্ক (ALOHANet)। আজকের দিনে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক হলো এই ইথারনেট (Ethernet)।